বাংলা
Surah আত-তূর - Aya count 60
وَالذَّارِيَاتِ ذَرْوًا
( 1 ) কসম ঝঞ্ঝাবায়ুর।
فَالْحَامِلَاتِ وِقْرًا
( 2 ) অতঃপর বোঝা বহনকারী মেঘের।
فَالْجَارِيَاتِ يُسْرًا
( 3 ) অতঃপর মৃদু চলমান জলযানের,
فَالْمُقَسِّمَاتِ أَمْرًا
( 4 ) অতঃপর কর্ম বন্টনকারী ফেরেশতাগণের,
إِنَّمَا تُوعَدُونَ لَصَادِقٌ
( 5 ) তোমাদের প্রদত্ত ওয়াদা অবশ্যই সত্য।
وَإِنَّ الدِّينَ لَوَاقِعٌ
( 6 ) ইনসাফ অবশ্যম্ভাবী।
وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الْحُبُكِ
( 7 ) পথবিশিষ্ট আকাশের কসম,
إِنَّكُمْ لَفِي قَوْلٍ مُّخْتَلِفٍ
( 8 ) তোমরা তো বিরোধপূর্ণ কথা বলছ।
يُؤْفَكُ عَنْهُ مَنْ أُفِكَ
( 9 ) যে ভ্রষ্ট, সেই এ থেকে মুখ ফিরায়,
قُتِلَ الْخَرَّاصُونَ
( 10 ) অনুমানকারীরা ধ্বংস হোক,
الَّذِينَ هُمْ فِي غَمْرَةٍ سَاهُونَ
( 11 ) যারা উদাসীন, ভ্রান্ত।
يَسْأَلُونَ أَيَّانَ يَوْمُ الدِّينِ
( 12 ) তারা জিজ্ঞাসা করে, কেয়ামত কবে হবে?
يَوْمَ هُمْ عَلَى النَّارِ يُفْتَنُونَ
( 13 ) যেদিন তারা অগ্নিতে পতিত হবে,
ذُوقُوا فِتْنَتَكُمْ هَٰذَا الَّذِي كُنتُم بِهِ تَسْتَعْجِلُونَ
( 14 ) তোমরা তোমাদের শাস্তি আস্বাদন কর। তোমরা একেই ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিল।
إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ
( 15 ) খোদাভীরুরা জান্নাতে ও প্রস্রবণে থাকবে।
آخِذِينَ مَا آتَاهُمْ رَبُّهُمْ ۚ إِنَّهُمْ كَانُوا قَبْلَ ذَٰلِكَ مُحْسِنِينَ
( 16 ) এমতাবস্থায় যে, তারা গ্রহণ করবে যা তাদের পালনকর্তা তাদেরকে দেবেন। নিশ্চয় ইতিপূর্বে তারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ,
كَانُوا قَلِيلًا مِّنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ
( 17 ) তারা রাত্রির সামান্য অংশেই নিদ্রা যেত,
وَبِالْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ
( 18 ) রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমাপ্রার্থনা করত,
وَفِي أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ لِّلسَّائِلِ وَالْمَحْرُومِ
( 19 ) এবং তাদের ধন-সম্পদে প্রার্থী ও বঞ্চিতের হক ছিল।
وَفِي الْأَرْضِ آيَاتٌ لِّلْمُوقِنِينَ
( 20 ) বিশ্বাসকারীদের জন্যে পৃথিবীতে নিদর্শনাবলী রয়েছে,
وَفِي أَنفُسِكُمْ ۚ أَفَلَا تُبْصِرُونَ
( 21 ) এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যেও, তোমরা কি অনুধাবন করবে না?
وَفِي السَّمَاءِ رِزْقُكُمْ وَمَا تُوعَدُونَ
( 22 ) আকাশে রয়েছে তোমাদের রিযিক ও প্রতিশ্রুত সবকিছু।
فَوَرَبِّ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ إِنَّهُ لَحَقٌّ مِّثْلَ مَا أَنَّكُمْ تَنطِقُونَ
( 23 ) নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের পালনকর্তার কসম, তোমাদের কথাবার্তার মতই এটা সত্য।
هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ ضَيْفِ إِبْرَاهِيمَ الْمُكْرَمِينَ
( 24 ) আপনার কাছে ইব্রাহীমের সম্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত এসেছে কি?
إِذْ دَخَلُوا عَلَيْهِ فَقَالُوا سَلَامًا ۖ قَالَ سَلَامٌ قَوْمٌ مُّنكَرُونَ
( 25 ) যখন তারা তাঁর কাছে উপস্থিত হয়ে বললঃ সালাম, তখন সে বললঃ সালাম। এরা তো অপরিচিত লোক।
فَرَاغَ إِلَىٰ أَهْلِهِ فَجَاءَ بِعِجْلٍ سَمِينٍ
( 26 ) অতঃপর সে গ্রহে গেল এবং একটি ঘৃতেপক্ক মোটা গোবৎস নিয়ে হাযির হল।
فَقَرَّبَهُ إِلَيْهِمْ قَالَ أَلَا تَأْكُلُونَ
( 27 ) সে গোবৎসটি তাদের সামনে রেখে বললঃ তোমরা আহার করছ না কেন?
فَأَوْجَسَ مِنْهُمْ خِيفَةً ۖ قَالُوا لَا تَخَفْ ۖ وَبَشَّرُوهُ بِغُلَامٍ عَلِيمٍ
( 28 ) অতঃপর তাদের সম্পর্কে সে মনে মনে ভীত হলঃ তারা বললঃ ভীত হবেন না। তারা তাঁকে একট জ্ঞানীগুণী পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিল।
فَأَقْبَلَتِ امْرَأَتُهُ فِي صَرَّةٍ فَصَكَّتْ وَجْهَهَا وَقَالَتْ عَجُوزٌ عَقِيمٌ
( 29 ) অতঃপর তাঁর স্ত্রী চীৎকার করতে করতে সামনে এল এবং মুখ চাপড়িয়ে বললঃ আমি তো বৃদ্ধা, বন্ধ্যা।
قَالُوا كَذَٰلِكِ قَالَ رَبُّكِ ۖ إِنَّهُ هُوَ الْحَكِيمُ الْعَلِيمُ
( 30 ) তারা বললঃ তোমার পালনকর্তা এরূপই বলেছেন। নিশ্চয় তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।
قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ أَيُّهَا الْمُرْسَلُونَ
( 31 ) ইব্রাহীম বললঃ হে প্রেরিত ফেরেশতাগণ, তোমাদের উদ্দেশ্য কি?
قَالُوا إِنَّا أُرْسِلْنَا إِلَىٰ قَوْمٍ مُّجْرِمِينَ
( 32 ) তারা বললঃ আমরা এক অপরাধী সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হয়েছি,
لِنُرْسِلَ عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِّن طِينٍ
( 33 ) যাতে তাদের উপর মাটির ঢিলা নিক্ষেপ করি।
مُّسَوَّمَةً عِندَ رَبِّكَ لِلْمُسْرِفِينَ
( 34 ) যা সীমাতিক্রমকারীদের জন্যে আপনার পালনকর্তার কাছে চিহিߦ#2468; আছে।
فَأَخْرَجْنَا مَن كَانَ فِيهَا مِنَ الْمُؤْمِنِينَ
( 35 ) অতঃপর সেখানে যারা ঈমানদার ছিল, আমি তাদেরকে উদ্ধার করলাম।
فَمَا وَجَدْنَا فِيهَا غَيْرَ بَيْتٍ مِّنَ الْمُسْلِمِينَ
( 36 ) এবং সেখানে একটি গৃহ ব্যতীত কোন মুসলমান আমি পাইনি।
وَتَرَكْنَا فِيهَا آيَةً لِّلَّذِينَ يَخَافُونَ الْعَذَابَ الْأَلِيمَ
( 37 ) যারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিকে ভয় করে, আমি তাদের জন্যে সেখানে একটি নিদর্শন রেখেছি।
وَفِي مُوسَىٰ إِذْ أَرْسَلْنَاهُ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ بِسُلْطَانٍ مُّبِينٍ
( 38 ) এবং নিদর্শন রয়েছে মূসার বৃত্তান্তে; যখন আমি তাকে সুস্পষ্ট প্রমাণসহ ফেরাউনের কাছে প্রেরণ করেছিলাম।
فَتَوَلَّىٰ بِرُكْنِهِ وَقَالَ سَاحِرٌ أَوْ مَجْنُونٌ
( 39 ) অতঃপর সে শক্তিবলে মুখ ফিরিয়ে নিল এবং বললঃ সে হয় যাদুকর, না হয় পাগল।
فَأَخَذْنَاهُ وَجُنُودَهُ فَنَبَذْنَاهُمْ فِي الْيَمِّ وَهُوَ مُلِيمٌ
( 40 ) অতঃপর আমি তাকে ও তার সেনাবাহিনীকে পাকড়াও করলাম এবং তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। সে ছিল অভিযুক্ত।
وَفِي عَادٍ إِذْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الرِّيحَ الْعَقِيمَ
( 41 ) এবং নিদর্শন রয়েছে তাদের কাহিনীতে; যখন আমি তাদের উপর প্রেরণ করেছিলাম অশুভ বায়ু।
مَا تَذَرُ مِن شَيْءٍ أَتَتْ عَلَيْهِ إِلَّا جَعَلَتْهُ كَالرَّمِيمِ
( 42 ) এই বায়ু যার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিলঃ তাকেই চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দিয়েছিল।
وَفِي ثَمُودَ إِذْ قِيلَ لَهُمْ تَمَتَّعُوا حَتَّىٰ حِينٍ
( 43 ) আরও নিদর্শন রয়েছে সামূদের ঘটনায়; যখন তাদেরকে বলা হয়েছিল, কিছুকাল মজা লুটে নাও।
فَعَتَوْا عَنْ أَمْرِ رَبِّهِمْ فَأَخَذَتْهُمُ الصَّاعِقَةُ وَهُمْ يَنظُرُونَ
( 44 ) অতঃপর তারা তাদের পালনকর্তার আদেশ অমান্য করল এবং তাদের প্রতি বজ্রঘাত হল এমতাবস্থায় যে, তারা তা দেখেছিল।
فَمَا اسْتَطَاعُوا مِن قِيَامٍ وَمَا كَانُوا مُنتَصِرِينَ
( 45 ) অতঃপর তারা দাঁড়াতে সক্ষম হল না এবং কোন প্রতিকারও করতে পারল না।
وَقَوْمَ نُوحٍ مِّن قَبْلُ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا قَوْمًا فَاسِقِينَ
( 46 ) আমি ইতিপূর্বে নূহের সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি। নিশ্চিতই তারা ছিল পাপাচারী সম্প্রদায়।
وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ
( 47 ) আমি স্বীয় ক্ষমতাবলে আকাশ নির্মাণ করেছি এবং আমি অবশ্যই ব্যাপক ক্ষমতাশালী।
وَالْأَرْضَ فَرَشْنَاهَا فَنِعْمَ الْمَاهِدُونَ
( 48 ) আমি ভূমিকে বিছিয়েছি। আমি কত সুন্দরভাবেই না বিছাতে সক্ষম।
وَمِن كُلِّ شَيْءٍ خَلَقْنَا زَوْجَيْنِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
( 49 ) আমি প্রত্যেক বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি, যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।
فَفِرُّوا إِلَى اللَّهِ ۖ إِنِّي لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ مُّبِينٌ
( 50 ) অতএব, আল্লাহর দিকে ধাবিত হও। আমি তাঁর তরফ থেকে তোমাদের জন্যে সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
وَلَا تَجْعَلُوا مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ ۖ إِنِّي لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ مُّبِينٌ
( 51 ) তোমরা আল্লাহর সাথে কোন উপাস্য সাব্যস্ত করো না। আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
كَذَٰلِكَ مَا أَتَى الَّذِينَ مِن قَبْلِهِم مِّن رَّسُولٍ إِلَّا قَالُوا سَاحِرٌ أَوْ مَجْنُونٌ
( 52 ) এমনিভাবে, তাদের পূর্ববর্তীদের কাছে যখনই কোন রসূল আগমন করেছে, তারা বলছেঃ যাদুকর, না হয় উম্মাদ।
أَتَوَاصَوْا بِهِ ۚ بَلْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ
( 53 ) তারা কি একে অপরকে এই উপদেশই দিয়ে গেছে? বস্তুতঃ ওরা দুষ্ট সম্প্রদায়।
فَتَوَلَّ عَنْهُمْ فَمَا أَنتَ بِمَلُومٍ
( 54 ) অতএব, আপনি ওদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। এতে আপনি অপরাধী হবেন না।
وَذَكِّرْ فَإِنَّ الذِّكْرَىٰ تَنفَعُ الْمُؤْمِنِينَ
( 55 ) এবং বোঝাতে থাকুন; কেননা, বোঝানো মুমিনদের উপকারে আসবে।
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
( 56 ) আমার এবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।
مَا أُرِيدُ مِنْهُم مِّن رِّزْقٍ وَمَا أُرِيدُ أَن يُطْعِمُونِ
( 57 ) আমি তাদের কাছে জীবিকা চাই না এবং এটাও চাই না যে, তারা আমাকে আহার্য যোগাবে।
إِنَّ اللَّهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ
( 58 ) আল্লাহ তা’আলাই তো জীবিকাদাতা শক্তির আধার, পরাক্রান্ত।
فَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا ذَنُوبًا مِّثْلَ ذَنُوبِ أَصْحَابِهِمْ فَلَا يَسْتَعْجِلُونِ
( 59 ) অতএব, এই যালেমদের প্রাপ্য তাই, যা ওদের অতীত সহচরদের প্রাপ্য ছিল। কাজেই ওরা যেন আমার কাছে তা তাড়াতাড়ি না চায়।
فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ كَفَرُوا مِن يَوْمِهِمُ الَّذِي يُوعَدُونَ
( 60 ) অতএব, কাফেরদের জন্যে দুর্ভোগ সেই দিনের, যেদিনের প্রতিশ্রুতি ওদেরকে দেয়া হয়েছে।